পুরনো সেই দিনের কথা
পুরনো কথা কই!
ছোট্টবেলার হঠাৎ সন্ধ্যায় সেই লোডশেডিং এর কথা মনে আছে? যার যার পড়ার বই ছেড়ে হুর হুর করে নেমে যেতাম বাসার নিচে। আগের শহুরে বাড়িগুলোর আশেপাশেই থাকতো মাঠ, বিশাল খোলা জায়গা। সেখানে আমার মত ছোট্ট অনেক মানুষের অসময়ে খেলার স্বাধ মিটতো এই হঠাৎ হওয়া লোডশেডিং- এ। বলা যায় নিত্যদিনের এক রুটিন ছিলো সেটা। আর চাঁদনী আলোর রাত হলেতো কথাই নেই, জোৎস্নার আলো সারা গায়ে মেখে গুনতে বসে যেতাম কে কয়টি আকাশের তারা দেখতে পাচ্ছে! এত মোহনীয় লাগতো, সেরা সুখি মনে হতো নিজেকে। বাদামওয়ালা মামারা এই সময় বেশ ভালো কামাতো। কারণ অন্ধকারে খেলার ফাঁকে বুট-বাদাম খাওয়ার আলাদা একটা মজা ছিলো। সবাই চাইতাম বিদ্যুৎ আরও পরে আসুক, সেটা ঘড়ি পেরিয়ে ঘন্টা দুয়েক হলেতো কথাই নেই! খুশির সীমা বেড়ে যেতো। চলতো আমাদের ক্ষুদে মানুষদের নানান জল্পনা-কল্পনা আর বিশাল গল্পের আসর। তখন শহর কিংবা গ্রাম যেটাই হোক, এই আনন্দ প্রতিটি শিশু উপভোগ করেছে।
আজকাল তো লোডশেডিং জীবনের এক অংশই বলা যায়, তবে আগের মতো এই সময়টিকে উপভোগ্য করার মতো আর কেউ নেই। ঘরে ঘরে আইপিএস এসে সেই পার্থক্য মুছে ফেলেছে। এখন স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব এগুলোই ভরসা। সেটিতেই সবাই ডুবে থাকে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও এখন আর সেই মূহুর্ত স্বরণ করে রাখার মতো বাচ্চা এই জেনারেশনে পাওয়া যায় না।
ভাগ্যিস কিছুটা আগে জন্মেছিলাম, নাহলে এমন কিছু জীবনে কখনোই উপভোগ করতে পারতাম না। এখনো লোডশেডিং-এর চাঁদনী রাতের কথা ভুলতে পারিনা! মনেই গেঁথে আছে।
'পুরনো সেই দিনের কথা'।
- হাবিবা সুলাইমান।
Comments
Post a Comment