আলোর খোঁজে
বিনয়ী হওয়া দোষের নয় বরং সবচেয়ে কঠিন কাজ। তবে নিজের পারসোনালিটি স্ট্রং করাও জরুরি। আপনি মতামতের প্রাধান্য সেভাবেই দিবেন যেভাবে আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে যায়, অভিমত গ্রহণের ক্ষেত্রে যেখানে কোনো দ্বিমত থাকবেনা। আপনার কথা-বার্তা চালচলন সবকিছুতেই স্ট্যাবলিটি থাকা প্রয়োজন, যে সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে পারার মতো।
আমরা সামাজিকতা বজায় রাখতে অনেকসময়ই অনেকের মতামতের সাথে এতটা খাপ খাইয়ে নিতে চাই যেন নিজের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। অথচ তার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি যেমন, তেমনি ঠিক যতক্ষণ না তা দ্বীন-ইসলাম বহির্ভূত হয়, কারো ক্ষতির বা মনোকষ্টের কারণ হয়। দুনিয়াতে টিকতে গেলে যার যার অবস্থান তাকেই শক্তপোক্ত করে নিতে হয়, অন্যথায় দমকা বাতাসে নিজের অস্তিত্ব হারানোর উপায় হয়।সবাই কেন জানি নরম সরম মানুষকে পেয়ে বসে, Just like taken for granted. যতক্ষণ না সে প্রতিবাদ করছে ততক্ষণ তার উপর চাপাতেই থাকে চাপাতেই থাকে। তার কোনো অভিযোগ নেই, সব মেনে নিচ্ছে তার মানে এই যে সে এমনটাই, আর যেভাবে ইচ্ছা তার উপর ছড়ি ঘুরিয়ে নাচানো যায়। অথচ হতে পারে এটা তার বিনয়ী হবার একটা ধাপ মাত্র। সে হয়তো আল্লাহর ভয়ে নিজেকে সবসময় গুটিয়ে রাখে যাতে করে কারো সাথে তার ঝামেলা না হয়, হাশরের ময়দানে কেউ তার বিরুদ্ধে সাক্ষী না দেয় এই বলে যে, অমুকে আমায় এই এই কথা দিয়ে কষ্ট দিয়েছে। তাই বিনা বাক্যব্যয়ে সে চুপচাপ সব মেনে নেয়। কিন্তু এভাবে তো দুনিয়াতে বেঁচে থাকাই দায়। মনে রাখতে হবে দুনিয়াতে চলার জন্য আমাকে ততটাই শক্ত হওয়া প্রয়োজন যতটা না মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে বা ক্ষতি করছে। তাই নিজের ব্যক্তিত্ব সেভাবেই গঠন করতে হবে যেভাবে মানুষ আমায় সামান্য খারাপ কিছু বলার আগে দশবার ভেবে নেয়।
ব্যক্তিত্ব হবে এমন, না-কে না বলার, হ্যা-কে হ্যা বলার সামান্যটুকু জোড় হলেও থাকবে কথায়। নিজের চলাফেরা, আচার-আচরণে এমন এক গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তোলা উচিত, যে মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধা করতে শিখে। নিজেদের দরকারে আপনার মতামত জানতে চায়, মতামতের গুরুত্ব দেয়। আপনার উপরে অযাচিত লাউড ভয়েসে কথা বলাকে প্রতিহত করতে শিখুন, বলুন ভদ্রতা বজায় রাখতে, সুন্দর উপস্থাপনা আপনি পছন্দ করেন। এই এই আচরণ আপনি বরদাস্ত করেন না। নিজের অবস্থান ও মানসিকতা অত্যন্ত মার্জিত আচরণের মাধ্যমে সবার কাছে তুলে ধরবেন। এগুলো সব একদিনে তৈরি হবে না, ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাতে হবে। উত্তম চরিত্রের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হলো- সুন্দর ব্যক্তিত্ব। মানুষ জীবনকে সুন্দর করতে কতইনা উপকরণের পিছে ছোটে, কিন্তু ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য বর্ধনে কেউই মনোযোগী নয়। অথচ কত সহজেই বিনয়ী কিন্তু শক্ত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠা যায় অল্প কিছু প্রচেষ্টাতেই। আমরা কয়জন এসবের জন্য মেহনত করি? একজন মানুষের প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরের সবচেয়ে বোল্ড সাইড এটি।
দু'আর মাধ্যমে আমরা নিজেদের চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব সুন্দর করতে পারি। কুরআনিক দু'আ গুলোকে কাজে লাগাতে পারি ইনশা আল্লাহ্। আল্লাহ আমাদের উত্তম ব্যক্তিত্ত্বসম্পন্ন হওয়ার তৌফিক দিন, আল্লাহুম্মা আমিন।
'আলোর খোঁজে'
- হাবিবা সুলাইমান'
#HabibasEphemeris
Comments
Post a Comment