'রংধনুর হাতছানি'



বুদ্ধিমান আমরা কাকে বলি? যে নিজের বিবেক ও বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে ঠিক-ভুল নির্ণয় করার যোগ্যতা রাখে। সে জানে, সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয়ে পশ্চিমদিকে অস্ত যায়। আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেলে বৃষ্টি বা ঝড়ের সম্ভাবনা থাকে। ফুলের কলি আসা মানে সেখান থেকে ফুল-ফল হবে। এই ব্যাপারগুলো যেমন নিতান্তই সাধারণ ব্যাপার, ঠিক যুক্তির ভিত্তিতে একজন বুদ্ধিসম্পন্ন, সঠিক বুঝসম্পন্ন মানুষের কাছে ব্যাপারগুলো ইউনিভার্সাল ট্রুথের মতো। যা হওয়ার, যা কিছু স্বাভাবিক তাই আমাদের জন্য উত্তম, বরং এর বিপরীত বাত্যয় ঘটলে তা অস্বাভাবিক বা আমাদের জন্য কখনোই কল্যাণকর নয়।


ঠিক একইভাবে পুরুষ নারীর পরিপূরক, নারী পুরুষের। পুরুষ তার বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্রভাবে ধারণ করবে, নারীও তাই। কারো মিশ্রণের প্রয়োজন নেই। যে আল্লাহ প্রদত্ত নারী-পুরুষ উভয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করে, শুধুমাত্র তার হিসাব আলাদা, কারণ এতে তার কোনো হাত নেই। বাদবাকিরা বলতে গেলে যারা ট্রান্সজেন্ডার ও সমকামী কিংবা বাইসেক্সুয়াল এরা সবাই নিজেদের চিন্তাধারাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যেন বিষয়টি খুব সাধারণ ও প্রাকৃতিক। কিন্তু না, স্বাভাবিক বিষয়গুলোকে অস্বাভাবিক কন্সেপ্ট বানিয়ে নিজেদের মগজকে কলুষিত তো করেছেই সেই সাথে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বাচ্চা, বৃদ্ধ সবার মগজে এই বিষ ঢেলে দিচ্ছে। কিভাবে তারা সমাজের আইডল হয়, বুদ্ধিমান লোকের সারিতে থাকে??? প্রশ্নই আসে না, বরং তারা অস্বাভাবিক ও মানসিক বিকারগ্রস্ত। এরা দিনে চাঁদের আলো আর রাতে সূর্যের আলোর মতো অতিপ্রাকৃত বিষয়গুলোকে স্বাভাবিক ধরে নেওয়াতে বদ্ধপরিকর। আদতে তারা যে কতটা উন্মাদ, তাদের সেই ধারণা আছে নাকি নেই সেদিকে না যাই, কিন্তু এদের প্রোপাগান্ডায় যে পা দিয়েছে সে-ই শেষ হয়ে যাবে, বরবাদ হয়ে যাবে।

আমার একটাই প্রশ্ন, পুরুষ নারীতে রুপান্তরিত হয়ে নারী অধিকার নিয়ে কথা কেন বলবে? নারী-ই বা পুরুষ হয়ে কেন? নারী-নারীকে কিংবা পুরুষ-পুরুষকে বিয়ে করে বিয়ের যে উদ্দেশ্য বা জৈবিক ও মানসিক চাহিদা সেটা কিভাবে পূরণ হয়? বিয়ের যে অর্থ দাঁড়ায়, সেটা কখনো এই ট্রান্সজেন্ডার বা সমকামীরা পূরণ করার আদৌ যোগ্যতা রাখে কি? না, কখনোই না। তাদের থিমের সাথে বিয়ে নামক শব্দ কিংবা নারী-পুরুষের ক্ষমতায়নের ব্যাপারগুলো যায় না। যে স্বতন্ত্রভাবে নারী কিংবা পুরুষ কোনোটাই না, কিংবা ইচ্ছে করে নিজের ট্রান্সফরমেশন নিজেই করিয়েছে, তার মানসিক বিকৃতি কতটুকু বা এসব বুঝ কতটুকু থাকবে তা বলাই বাহুল্য।

বাদ থাকলো থার্ড জেন্ডারদের কথা। যারা জন্মগতভাবেই রবের প্রদত্ত নারী ও পুরুষ উভয় বৈশিষ্ট্য লালন করছে নিজেদের মধ্যে তাদের তো কোনো দোষ নেই, তাদের সাথে ট্রান্সজেন্ডারদের তুলনা কখনোই হবে না। এগুলো যার আক্কেল আছে, সে খুব ভালোভাবেই জানবে দু'টোর ফারাক। তবে এটাকে পুঁজি করে মানুষের মস্তিষ্কে যে গোবর ঢালা হচ্ছে, এবং সমকামিতা নিয়ে যে বাড়াবাড়ি চলছে এর শেষ কোথায়??

এখন থেকেই বাচ্চাদের এবং নিজেদের এই ব্যাপারে বেশি বেশি জ্ঞান অর্জন এবং ছোট থেকেই ছেলেকে ও মেয়েকে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের ব্যাপারে ধারণা দিতে হবে যে, 'তুমি ছেলে, তুমি কখনোই মেয়ে হতে পারো না ; তুমি মেয়ে, তুমি কখনোই ছেলে হতে পারো না। পুরুষ কখনো একজন পুরুষকে বিয়ে করতে পারে না, নারী কখনো নারীকে। আল্লাহ্ আমাদের এভাবে বানাননি, এই উদ্দেশ্যে পৃথিবীতে পাঠান নি। সূর্য প্রতিদিন যেদিক থেকে উদিত হয়, আবার যেদিকে অস্ত যায় এটি যেমন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ঠিক তেমনি নারী-পুরুষের ব্যাপারটিও একই, স্বাভাবিক। বরং একগুচ্ছো দুষ্ট লোক, মাথা-মোটা লোকেরা এসব ব্যাপারগুলোকে অস্বাভাবিকভাবে প্রচার করছে। তোমরা তাদের ধারের কাছেও ঘেঁষবেনা, তাদের কথায় কর্ণপাত করবে না'।

আমরা বেশি বেশি কওমে লূতের কথা স্বরণ করব, যারা তাদের এসব উগ্রতার কারণে গোটা জাতি আল্লাহর গজবে ও অভিশাপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সীমালঙ্ঘনকারীদের ছেড়ে দেন না!

লেখা: হাবিবা সুলাইমান
#habibasephemeris.

Comments

Popular Posts