নিজেকে গড়ার এখনি সময়
একটা সময় ছিল যখন আমার নরম হৃদয় কঠিন বিষয়গুলোকে সহজভাবে নিতে পারতো না। অল্পতেই ফুসে যেতাম। এমনকি বাবা-মায়ের সামান্য শাসন টাতেও চোখে পানি টলমল করত। দিন যেতে যেতে যখন বড় হলাম, আস্তে আস্তে নানান কঠিন বিষয় জীবনে চলার পথে উঁকিঝুকি দিত। বিভিন্নরকম প্রতিকূল স্তর পার হতে গিয়ে আমার কোমল মন এখন সয়ে গেছে। অবস্থা এমন যে আগের সেই কোমল নরম স্বভাব টা নেই। চোখ হয়ত অশ্রুসিক্ত হয়না, মন খারাপ হলেও ভেঙে পড়ার মত না। তবে মনের নরম জায়গাটা হয়ত এখনো কোথাও স্বযত্নে লুকিয়ে আছে। তাই হয়তো মাঝে মাঝে কষ্টা টা পেয়েই যাই।
ধরুন আপনার নফস টাও ঠিক একইভাবে নিয়মিত খারাপকাজের প্রভাবে সয়ে যায়। আমাদের অন্তর বা নফস এমন একটা জিনিস যেটা আপনি ঠিক যেভাবে পরিচর্যা করবেন এটা ঠিক সেভাবেই থাকবে। দিনের পর দিন ভুল পথে চলতে থাকা, খারাপ কাজের ফলে নফস ঠিক একইভাবে সয়ে যায়, খারাপ-মন্দের পার্থক্য করতে পারেনা। কোমলতা হারিয়ে যেতে থাকে। একসময় অবাধ্য হয়ে আপনাকেই নফসের গোলাম বানিয়ে ছাড়বে। কোনোকিছুই গায়ে না লাগার মতন, পার্থক্য করতে পারার মতন অবস্থা থাকেনা।
এরমাঝে অনেকসময় নফস ভুল করার পর বুঝতে পারে, মনের মাঝে সুপ্তভাবে লুকিয়ে থাকা বিবেক ভাবায় তার গন্তব্যের কথা। ভাবায় এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতে তার কর্তব্য কি, কেন সে এসেছে, কোথায় যাবে সেসব। এতসব মন্দের মাঝেও নিজের পরিচয় কে নতুনভাবে তুলে ধরে। রবের আহবানে সাড়া দেয়। সেইসব নফসের অধিকারী বান্দারা হয়ত নিজেকে সংশোধন এমনভাবেই করে যখন স্বয়ং আল্লাহ্ নিজেই সন্তুষ্ট হয়ে যান। হতেও পারে প্রিয় বান্দাদের মাঝে শামিল করে নেন।
তাই গুনাহ বা মন্দ কাজে যখনই মনে হবে এটা ভুল, তওবা করে ছেড়ে দেওয়াই উচিত, সময় যত গড়াবে, আপনার নফস শক্ত হতে থাকবে, একের পর এক ছাড় দিতে দিতে একসময় হয়ত প্রচন্ড বেয়ারা হয়ে যাবে। ঠিক-ভুলের বিচার করার অবস্থায় থাকবেনা। একটাসময় যখন আপনি সত্যিকার অর্থেই ফিরে আসতে চাইবেন, হতেও পারে আপনার সময় শেষ!
তাই সুযোগ থাকতেই আপনার ঢাল তৈরী করে নিন, সময় যে ঘনিয়ে এলো, পার দিতে হবে অনেক পথ!!
Comments
Post a Comment